B-98 #লক্ষীর ঘর

লক্ষীর ঘর 
জীবনে বেশ কিছু কিছু হাসির  অভিজ্ঞতা একটু শেয়ার করতে ইচ্ছে করে, তাই  দুটো বাস্তব কাহিনীকে ঘিরে আমার এই লেখা  ATM । সালটা 2018,ভেলোরে গেছি ঠিক দুর্গোপুজোর ষষ্ঠীর দিন পৌঁছয়। উদ্দেশ্য একটাই দিদিকে দেখতে যাওয়া। দিদির সবে সবে ক্যান্সার ধরা পড়েছে গলায় তাই সে ও দাদা বিগত প্রায় পাঁচ মাস সেখানে আছেন একটি বাসা ভাড়া করে। আমি ও আমার পরিবার অর্থাৎ আমরা তিনজন তাই সেখানে গিয়ে পৌঁছয়। এমনিতেই মনটা ভারী কষ্টে কেটেছিল সে বছর দুর্গোপূজোর সময়টা। দিদিরা থাকতেন Christian Medical College অর্থাৎ CMC  থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে বাগায়াম বলে একটি জায়গায়। যে কটা দিন ছিলাম দিদিকে নিয়ে সেই সকালে চলে যেতাম ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যে হয়ে যেত। বাড়িতে এসে কোনো কাজ না থাকাতে বেড়িয়ে পড়তাম সান্ধ্য ভ্রমণে একটু অশান্ত মন কে শান্ত করতে,আবার কখনো বা সেখানেই কাছাকাছি একটা গণেশ মন্দিরে ইষ্টদেবতা ভেট ও প্রণাম করতে। জানতাম কিছু লাভ নেই তাও আর কি যদি কোনো মিরাকেল হয়। 
                                     রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে একদিন কিছুটা দূরে চলে গিয়েছিলাম শুধুমাত্র  ATM খুঁজতে। বহুক্ষণ খোঁজার পর অবশেষে পাওয়া গেলো বাইরে লেখা UCO BANK ATM। আমি কাঁচের দরজা খুলে সবে ATM কার্ডটা বার করেছি, এমন সময় তামিল ভাষায় “ ইল্লোড়ও বিল্লোরো” কি বললো আমায় বুঝলাম না, আমাকে প্রায় ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সে বাইরে বার করে দিল ATM থেকে। প্রথমে ভয়ে ভাবলাম এই রে বিদেশে বিপাকে এসে পড়বি তো পর সাক্ষাৎ গুন্ডার খপ্পরে পড়লাম। মনে তো হচ্ছে ও বোধহয় আমার সমস্ত টাকা পয়সা লুট করতে চাইছে। আমার PIN নম্বর জানতে চাইছে। দেখলাম সে সমান তালে তার ভাষায় বলেই চলেছে আর আমি ও ঠেটার মত দাঁড়িয়ে আছি দেখি ব্যাটা কি করে আমায়। বলতে বলতে লোক জড়ো হয়ে গেছে ATM এর বাইরে। এমন সময় দেখি এক ভদ্রমহিলা ঢুকলেন ATM ঘরে। কিন্তু উনাকে দেখে একটু অবাক হলাম,ঢুকলেন কিন্তু চটি বাইরে খুলে। আবার বেড়িয়ে এসে চটি পড়ে চলেও গেলেন। কাহিনী টা বুঝতে এতটুকু দেরি হোলো না তাই এবার মনে মনে ভয় দূর হয়ে মিচকি মিচকি হাসছি আর মনকে বলছি দেখি তো আবার যাই ওরা কিছু আমায় করে কিনা। লোকগুলো তখনও বাইরে দাঁড়িয়ে মজা দেখছে আমি কি করি। চটি খুলতে অসুবিধে নেই, কিন্তু কি করে খুলি বাইরে দু চারটে কুকুর শিশু খেলা করছে। চটি খুলবো আর ওরা সেটা মুখে নিয়ে পগার পাড় হবে। তারপর ভাবলাম ভদ্রমহিলাটির যখন করে নি আমারও করবে না GOOD BOY KUKUR নিশ্চয়। আমি তিন রকমের ভয় নিয়ে ঢুকলাম ATM এ। এক বাইরে যাঁরা দাঁড়িয়ে গুন্ডা কিনা বুঝতে পারছি না, দুই বেড়িয়ে এসে চটি যুগল ফিরে পাবো কিনা, তিন কম টাকা তুলবো যদি কেঁড়ে নেয় তাহলে কমের উপর দিয়ে যাবে। বেশ পাত্তা না দিয়ে আবারও ঢুকলাম ভয় হচ্ছে আসছে নাকি আবারও ঘাড় ধাক্কা দিতে। বেরোতেই দেখি ওরা হাসছে আমায় দেখে। মনে মনে রাগ হোলো কেনই বা হাসছে হতে পারে আমায় শায়েস্তা করতে পেরেছে। দেখি আমার ডান পায়ের চটিটা GOOD BOY নিয়ে চলে গেছে একেবারে অনেক দূরে। যাক সে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়ে আমি খালি পায়ে সামনে একটা মুচির কাছ থেকে চটি কিনে সেদিন বাড়ি ফিরি। সে দেশে ATM এ ঢুকতে গেলে যে চটি খুলে ঢুকতে হয় এই অভিজ্ঞতা হোলো। হয়তো ATM টাকা দেয় সে লক্ষী, তাই হয়তো ওটি লক্ষীর ঘর বলে তারা মানে। এমনিতেই তাঁরা ভীষণ ধর্মপরায়ণ তাই হয়তো এই বিশ্বাস।
দ্বিতীয় টি হোলো সেই একই লক্ষীর ঘর নিয়ে। মনে পড়ে টাকা তুলতে গেলে কোনো কোনো মেশিনে PUNCH করে বার করে নিলেই হয়ে যায় আবার কোনো মেশিনে PUNCH করলে CARD টা আটকে যায়। ততক্ষন পর্যন্ত বেড় হয় না যতক্ষণ আপনি টাকা পাচ্ছেন না। প্রথম প্রথম বেশিরভাগ ATM ছিল UTI ATM যা এখন AXIS BANK। মনে পড়ে এক বয়স্ক ভদ্রলোক টাকা তুলতে গেছেন ঠিক TEA BOARD এর উল্টোদিকে CITI BANK ATM ছিল সেখানে। সে ভদ্রলোকের কি ভয় দাদা আমার সব গেলো CARD দিলাম আর ফেরৎ দিচ্ছে না। আমার টাকার দরকার নেই যদি পারেন আমার CARD টা একটু বার করে দিন। সেদিন খুব হেসেছিলাম মনে মনে। 

Comments

sadamata101.blogspot.com

B-47#বিশ্বকর্মা_পূজো

সন্তোষ ঢাকি

B-71#GANESH_PRASADAM. ( গনেশজির ভোগ নিবেদন মোদক ও পূরণ পুলি)