B-81# Status নাকি cactus

Status নাকি cactus 

দুটো কথায় শুনতে ভারী মজাদার লাগে, যাঁর আক্ষরিক  অর্থে প্রথমটা হোলো একটা পরিধি বা লেবেল, আর দ্বিতীয়টা হোলো কাঁটা গাছ যা মরুভূমিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পাওয়া যায়। যদিও এর মিল সবার ক্ষেত্রে সমান নয়, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একটু তলিয়ে দেখলে সমার্থক। অর্থ বা পয়সা এ এমন এক জাদুকাঠি কেবলই লাফায় দম দেওয়া পুতুলের মত। যাঁর কাছে যত দামি পুতুল সে বেশিক্ষন লাফায়,আর যাঁর কাছে কমদামি সে অল্পক্ষন লাফায়, কিন্তু লাফায়। কিন্তু মজার ব্যাপার হোলো কেউ কেউ অল্প দম দেয় , তাই সে বেশিক্ষন টিকিয়ে রাখতে পারে, গদা কথায় সে সঞ্চয় করে ভবিষ্যতের জন্য, সেক্ষেত্রে লক্ষী চঞ্চলা হোন না, অধিষ্ঠান করেন।কিন্তু বিপুল পরিমান অঘোষিত অর্থ হলে কি করবেন সেখানে ভয়, না রাখার জায়গা না সুষ্ঠ ভাবে খরচের জায়গা তখনই cactus এসে হাজির হোন। 
            Status কথাটা একটা বিভ্রান্তিকর চিন্তাধারা একেকটা মানুষের কাছে, কেউ এটাকে অপভ্ৰংশ করেন আবার কেউ অতিরঞ্জিত,আবার কারো ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটা মার্জিত চিন্তাধারা। যাঁরা অতিরঞ্জিত করেন তাঁদের ক্ষেত্রে এর সংজ্ঞাটা একটু ধনবান  বা high society সে ক্ষেত্রে তাঁদের সাথে কথা বললেই বুঝতে পারবেন। কত গুলো বোকা বোকা লোক নিত্যদিন, প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে অর্থের প্রাচুর্য দেখাতে থাকেন আর সেখানেই ভাবেন জাতে উঠেছি । এই শ্রেণীর লোকেরা একটা তকমা লাগিয়ে ঘোরেন, যাতে আশেপাশের লোকেরা অনায়াসে বলতে পারেন অমুক ভদ্রলোককে দেখলেই বোঝা যায় খুব high status এ belong করেন, যিনি বলছেন উনিও ভাবেন, যাঁকে উদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছে তিনিও অন্যের আকার ইঙ্গিতে সুস্পষ্ট আত্মপ্রসাদ লাভ করেন। এবার আসুন কি সেই নির্বুদ্ধিতার তকমা পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রথমেই যেটা চোখে পড়বে একটা মোটা সোনার চেন, গোল গলার টি শার্ট, চেন টা অবশ্যই ভিতরে ঢোকানো, শুধু গলা দেখেই বুঝতে পারবেন। হাতে বিদেশী সিগারেট হতে পারে সেটা 555,বা Benson Hedges , সঙ্গে পরনে অতি অবশ্যই হাফ প্যান্ট। প্রসঙ্গত বলি এই হাফ প্যান্টটি কিন্তু ইউনিভার্সাল ড্রেস কোড স্টেশনে, এয়ারপোর্টে, রেস কোর্স, প্রাতঃ ভ্রমণ সবেতেই ঐ একই ” কেষ্টা” বিরাজ করেন। খুব হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলেন উদ্দেশ্য কি
ন্তু মহৎ, কিছু বোঝানোর জন্য নয় , দুই হাতে অজস্র মণিমুক্তো খচিত আংটি গুলোর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। বাজারে যখন ইনারা যান চামড়ার পার্স টা বেশ মোটা সঙ্গে অজস্র ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড,  পার্সে কোনো খুচরো টাকা থাকে না, হয় পাঁচশো বা দুহাজারের নোট ভর্তি, বাড়ির সামনে বাজার হলেও যাওয়া চায়  কিন্তু চার চাকায়। ভাষাতেও পারদর্শী হিন্দি, বাংলা ইংরাজি মিলিয়ে কথা বলেন, আর জনগোষ্ঠী  বা জনসমূদয় হলে সেখানে অনেক উচ্চস্বরে, যাতে আশেপাশের মানুষগুলো ও শুনতে পান কি বলছেন। যদি খুব ফিসফিস করে বলেন বুঝেই যাবেন কান পাতলে কোনোধরনের ব্যবসায়িক কথা নয়  বরং বেশির ভাগটাই cactus জীবনের ইতিকথা।
 উপরে যে কথাগুলো বলা হোলো কোনো অর্থেই তাঁদের উপর রাগ বা হিংসে থেকে  নয়। আসা যাক মহিলাদের কথায় ইনারা একটু চুপচাপ প্রকৃতির, পাড়া প্রতিবেশীদের সাথে বিশেষ একটা মেশেন ও না বা যেচে আলাপ ও করেন না, থাকেন নিজেদের মতন করে। তবে সঙ্গে  কোলে একটা ছোট্ট কুকুরশাবক যাকে নিয়েই তাঁর জীবন চলে প্রতিনিয়ত। বাড়িতে কখনো গেলে কোনো কারণে দেখবেন থরে থরে সাজানো বই কিন্তু সময়ই নেই তাই পড়া হয়ে ওঠেনি। পাড়ার ক্লাবের সাথে বিশেষ একটা যোগাযোগ নেই তবে উপকারে আসেন ইনারা একটা মোটা অংকের চাঁদা দিয়ে, তাই তাঁরা হোন প্রেসিডেন্ট। উনারা যুক্ত থাকেন শহরের নামীদামী ক্লাবের সাথে চেষ্টা করেন উঁচু দরের শিক্ষিত  লোকজনের সাথে ওঠাবসা করতে, যখন সেখানে পাত্তা পান না, নিজে নিজে তৈরী হোন আতেল নামক তকমায়। একটা মোটামুটি সাধারণ রূপরেখা টানতে চাইলাম যাতে বোঝাতে পারি বা আপনাদের চিন্তাধারা কি একই,এই ধরণের অতিরঞ্জিত status ওয়ালা মানুষদের  ক্ষেত্রে । ঠিক বলেছেন একেবারেই তাই কারণ অহেতুক অতিরিক্ত পয়সা খরচ তো করতে হবে তাই দিনের শেষে তৈরী হোন cactus এ। এই অতিরঞ্জিত status নামকের মানুষগুলোর আধিক্যই আজকের দিনে বেশি, এনারাই ভয়াবহ সমাজের ক্ষেত্রে তো বটেই এমনকি দেশের ক্ষেত্রেও। এনাদের গোষ্ঠীর মধ্যেই এনাদের বিচরণ তাই দিনের শেষে বা প্রকারন্তেও তৈরী হয়ে ওঠেন একেকটা cactus অর্থাৎ কাঁটা। যতধরণের দুর্নীতি বা কুবুদ্ধির বাহক এনারা নিজেই।
     মার্জিত চিন্তাধারার লোকেরাই কিন্তু আসল status ওয়ালা, তাঁরা এনাদের অর্থাৎ তকমা ওয়ালাদের  ধারে কাছেই আসেন না, অর্থের প্রতিপত্তি প্রচুর কিন্তু সে বোঝার উপায় নেই, আর cactus তো এনাদের বাড়ির চৌহদ্দি মাড়ান না। 
     Cactus কথাটা এখানে এক অর্থে কাঁটা যা আগেই বলা হয়েছে। প্রতিটি মুহূর্তে একটা মাদকাসক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেন ইনারা। যত ধরনের নোংরামি, গালাগালি, লোকঠকানো, অন্যকে হেনস্থা করা, কুমতলব আঁটা, সমস্তটাই পাবেন এখানে। চোখের সামনে নির্দ্বিধায় একটার পর একটা ভুল করেই চলেন, আবার সেটা স্বীকার তো করেনই  না উপরন্তু প্রশাসন বা আইনি ভয় দেখান এমন করে যাতে সাধারণ মানুষের মুখ বন্ধ করা যায় অনায়াসে। একজন দিনের পর দিন নেশাগ্রস্ত মানুষ তাঁর বোঝার বা ঠিকঠাক মতামত পোষণ করার ক্ষমতায় তো হারিয়ে ফেলেন তাঁর থেকে কিই বা আশা করবেন। মাথার ব্যামো যখন হয় সে কি ভালো কিছু চিন্তা করতে আদৌ পারেন? পারেন না বলেই ভুল চিন্তা দিনের পর দিন গ্রাস করে তাঁকে, আর এই ভুল চিন্তায় উনাকে ভাবায় উনি নিজে যা করে চলেছেন ঠিকই করছেন, সেখানেই status ও cactus হাত ধরে একটা কলুষিত সমাজ গড়ে তোলেন। আর সৃষ্টি হয় অবক্ষয়ের যার কিছুটা হলেও তির্যক দৃষ্টি পড়ে যুবসমাজের কাছে। শেষ পরিণতি কিন্তু ঐ জেলের ঘানি, যা এতকাল ভেবেছেন প্রশাসন বাঁচাবেন।
আজকের দিনে এই স্টেটাস কথাটা এতটাই অপভ্ৰংশ যে ” মানি লোক “ বলতে বহুক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ হয়তো বোঝেন যাঁদের বিপুল পরিমানে অর্থ আছে, মানি লোক কথাটাকেই উনারা অপভ্ৰংশ করেছেন,তাই তাঁকেই গণ্য করতে করতে কখন যে স্ট্যাটাসের সংজ্ঞা টা একটা পরিপূর্ন রূপ পেয়ে গেছে ভুল লোকগুলোর ক্ষেত্রে এটাই হোলো সবথেকে বড় দোষের। যেখানে মানুষটাই হোলো কলুষিত সেখানে তাঁর পারিপার্শিক সাকরেদ তো আরো কাঁটাময় হবেই,এতে আবার নতুন কি।
        ধরুন শ্রদ্ধেয় আব্দুল কালাম যদি আপনার সামনে এসে দাঁড়ান মুহূর্তে আপনি হয়তো এতটাই বিনম্র হবেন যে উনি যেটাই বলছেন সেটাই আপনার কাছে একটা বাণী হিসেবে সংকেত দেবে,
এটাই তো একটা উঁচু স্টেটাসের আসল পরিচয়। আবার যদি কাসভ এসে পৌঁছয় আপনার শরীর ভয়ে থর থর করে কেঁপে উঠবে। মনে পড়ে আব্দুল কালামের অন্ত্যেষ্টি আর কাসভের মৃত্যু একই দিনে ঘটেছিলো, দুজনেই তো মুসলমান সম্প্রদায়ের কত জন কাকে, কিভাবে নিয়েছিল সেদিন। সম্প্রদায় নিয়ে একটা তকমা ছুঁড়ে দেওয়া হয় এটা আমাদের ভুল একটা ধারণা, কারণটা খুবই সোজা তাতে মানুষের মনে খুব সহজেই নাড়া দেওয়া যায়। কাসভ তো প্রায় প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে আমাদের চারিপার্শ্বে শুধু নামের পরিবর্তন হচ্ছে বাদবাকি চিত্রটা তো এক কেউ একেবারে গুলি বিদ্ধ করছে আবার কেউ ধীর গতিতে উৎখাত করছেন সেই একই গুলি চালিয়ে খুবই সন্তর্পনে।
            

              
            

Comments

sadamata101.blogspot.com

B-47#বিশ্বকর্মা_পূজো

সন্তোষ ঢাকি

B-71#GANESH_PRASADAM. ( গনেশজির ভোগ নিবেদন মোদক ও পূরণ পুলি)